রংপুরে ১০ হিন্দু পরিবারকে উচ্ছেদ করে জায়গাজমি দখলের চেষ্টা

16

।। রংপুর প্রতিনিধি।। রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার জায়গীরহাট ঈদলপুর এলাকায় শত বছর ধরে বসবাস করা ১০টি হিন্দু পরিবারকে উচ্ছেদ করে তাদের জায়গাজমি দখল করার অপচেষ্টায় বাধা দেয়ায় রাজনৈতিক নেতা তোজাম্মেল হোসেনের  নেতৃত্বে তার দলবল হামলা চালালে নারী সহ ১০ জন আহত হয়। ওই নেতা কলেজ ছাত্রীর গলাটিপে ধরে হত্যার চেষ্টা করে। এ ঘটনায় থানায় মামলা দায়ের করা হলেও পুলিশ আসামীদের গ্রেফতার করছে না বরং সংখ্যালঘু হিন্দু পরিবারগুলোকে উল্টো তাদের বাড়ি ঘর জ্বালিয়ে দিয়ে তাদের হত্যা করার হুমকি দেয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

এলাকাবাসী ও পুলিশ এবং নির্যাতিতারা অভিযোগ করেছে শত বছর ধরে ১২টি হিন্দু পরিবার মিঠাপুকুর উপজেলার লতিফপুর ইউনিয়নের জায়গীরহাট ঈদুলপুর গ্রামে সরকারের ১৮ শতক জমিতে পরিবার পরিজন নিয়ে বসবাস করে আসছে। জায়গাটি জায়গীরহাট বাজার সংলগ্ন হওয়ায় লোলুপ দৃষ্টি পড়ে উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি তোজাম্মেল হোসেনের। বেশ কিছুদিন ধরে ওই স্থানে বসবাসকারী ১২টি হিন্দু পরিবারকে সেখান থেকে অন্যত্র চলে যাবার জন্য নানান ভাবে হুমকি দিয়ে আসছিলো তার লোকজন। গত ১১ সেপ্টেম্বর শুক্রবার তোজাম্মেল হোসেনের নেতৃত্বে ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য সাজু এনামুল হক আবুল কালাম সহ অর্ধ শতাধিক লোকজন নিয়ে সেখানে একটি ক্লাব ঘর স্থাপন করে সাইন বোর্ড লাগাতে গেলে সেখানে বসবাসকারী অঞ্জলি মোহন্ত সহ অন্যরা বাধা প্রদান করেন, এতে ওই নেতার লেলিয়ে দেয়া লোকজন অঞ্জলিকে বেদম মারধর করে। এ সময় তার কন্যা রংপুর কারমাইকেল কলেজের অনার্স প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী তার মাকে রক্ষা করতে এগিয়ে এলে তোজাম্মেল হোসেন নিজেই মেয়েটির গলা টিপে ধরে তাকে হত্যা করার চেষ্টা করে। শুধু তাই নয়, দফায় দফায় তাকে মারধর করে। (পুরো দৃশ্য ভিডিও করা আছে) এ সময় সেখানে অবস্থানরত হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকদের ওপর হামলা চালিয়ে তাদের মারধর করা হয়। তারা নারীদের শ্লীলতাহানি করে।

এ ঘটনায় অঞ্জলি মোহন্তের স্বামী রহত মোহন্ত বাদী হয়ে থানায় মামলা দায়ের করতে গেলে পুলিশ প্রথমে মামলা নিতে অস্বীকৃতি জানায়। পরে বিষয়টি উর্ধতন পুলিশ কর্তৃপক্ষকে জানানো হলে পরের দিন শনিবার বিকেলে মামলা রেকর্ড করে পুলিশ। যার মামলা নম্বর ৩২ তারিখ ১২.০৯.২০ইং। ধারা ১৪৩/৪৪৮/৩২৩/৩০৭/৩৫৪ দন্ডবিধি।

বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের রংপুর জেলার সাধারণ সম্পাদক স্বপন রায় হামলায় আহত পরিবারের সদস্যদের সাথে দেখা করেন ও ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। তিনি আরো জানিয়েছেন হামলাকারী ভূমিদস্যুরা নিরীহ হিন্দু পরিবারের সদস্যদের উপর মাদকদ্রব্যসহ অন্যান্য অভিযোগ এনে ঘটনাকে অন্যদিকে প্রবাহিত করার চেষ্টা করছে।