ফিরে দেখা মার্চ ২০০২ মার্কিন মানবাধিকার রিপোর্ট বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতন চলছে

5

॥ পরিষদ বার্তা রিপোর্ট ॥

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মানবাধিকার রিপোর্টে বাংলাদেশে  বিগত জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ওপর পরিচালিত নির্মম নির্যাতন-নিপীড়নের বিবরণ বিস্তারিতভাবে তুলে ধরা হয়েছে।

গত ১ মার্চ ওয়াশিংটনে মার্কিন মানবাধিকার রিপোর্ট ২০০১ প্রকাশ করা হয়। এ রিপোর্ট প্রকাশকালে মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রী কলিন পাওয়েল বলেছেন, যেসব দেশ সরাসরি মার্কিন সাহায্য গ্রহণ করে এই রিপোর্টে মূলত সেসব দেশের মানবাধিকার পরিস্থিতিই তুলে ধরা হয়েছে। রিপোর্টের বাংলাদেশ অংশে ২০০১ সালে তিন সরকারের আমলে মানবাধিকার বিরোধী নানা কর্মকান্ড বিশদভাবে উল্লেখ করা হয়েছে।

রিপোর্টে বলা হয়েছে, বিএনপি’র মুসলমান কর্মী-সমর্থকরা নির্বাচনের দিন হিন্দু ভোটারদের অনেক জায়গাতেই ভোট কেন্দ্রে যেতে বাধা দিয়েছে। হিন্দুদের আওয়ামী লীগের সমর্থক বিবেচনা করেই এ আচরণ করা হয়েছে। কেবল তাই নয়, নির্বাচনের পর হত্যা, নির্যাতন, ধর্ষণ, লুটপাটের মাধ্যমে হিন্দুদের তাদের ঘরবাড়ি ছেড়ে যেতে প্ররোচিত করা হয়েছে। এই সুপরিকল্পিত অত্যাচারে অনেকে প্রাণ বাঁচাতে এলাকা ছেড়ে চলেও গেছেন। কতিপয় ইসলামি মৌলবাদী গোষ্ঠী হিন্দুদের ভারতে তাড়িয়ে দেয়ার মাধ্যমে বাংলাদেশকে একটি নির্ভেজাল মুসলিম রাষ্ট্রে পরিণত করতে চেয়েছে। রিপোর্টে সংখ্যালঘু নির্যাতনের উদাহারণ হিসেবে চট্টগ্রামের নাজিরহাটের প্রিন্সিপাল গোপাল কৃষ্ণ মুহুরীর প্রকাশ্য খুনের ঘটনা, বানিয়াচরের চার্চে বোমা হামলায় ১০ জনের মৃত্যুর ঘটনাকে উল্লেখ করা হয়েছে।

লেখক, সাংবাদিক শাহরিয়ার কবিরকে গত ২২ নভেম্বর গ্রেফতারের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে রিপোর্টে বলা হয়, কোন কারণ না দেখিয়ে সরকার তাকে বিমান বন্দর থেকে গ্রেফতার করে। এর দু’দিন পর তার বিরুদ্ধে আপত্তিকর সামগ্রী বহন করার অভিযোগ আনা হয়। শাহরিয়ার কবিরের পক্ষ থেকে বলা হয়, তাকে আটক করার বিষয়টি আসলে সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতনের বিষয়টি আড়াল করার সরকারি প্রচেষ্টা মাত্র। এর পাশাপাশি সংবাদপত্রের ওপর সরকারি নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার কথাও উল্লেখ করা হয়।

রিপোর্টে ফতোয়া, এসিড নিক্ষেপ, ডিটেনশন, জেলখানার দুরবস্থা, রাজনৈতিক প্রতিহিংসা,গুম, খুন, সরকারি কর্মকর্তা ও রাজনৈতিক নেতাদের দুর্নীতির বিষয়গুলোও উল্লেখ করা হয়েছে।