মার্কিন নির্বাচন ঃ ট্রাম্প কি আবারো আসছেন ?

11

।। আন্তর্জাতিক প্রতিবেদক।।

ডোনাল্ড ট্রাম্প আর জো বাইডেন-এ দু’জনের মধ্যে কে হতে যাচ্ছেন ক্ষমতাধর পরাশক্তি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পরবর্তী প্রেসিডেন্ট। অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে, কেহ কারে নাহি হারে সমানে সমান। রিপাবলিকান আর ডেমোক্র্যাট-দু’পক্ষই নির্বাচনী যুদ্ধের রণদামামা বাজিয়ে চলেছে। সশস্ত্র পরিস্থিতি তৈরির হুমকি দিচ্ছে। প্রয়োজনে সুপ্রীম কোর্টের দ্বারস্থ হবার সম্ভাবনাও তৈরি হচ্ছে। এমনি এক সংকটজনক পরিস্থিতিতে মঙ্গলবার ৩ নভেম্বর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে।

গেলো বারের নির্বাচনেও মনে হয়েছিল ডেমোক্রেটিক পার্টির হিলারী ক্লিনটন বিপুল ভোটে জিতবেন। নির্বাচনের পূর্বেকার নানান জরীপে তা-ই দেখানো হচ্ছিল। ট্রাম্পের দৈহিক ভাষা অর্থাৎ বডি ল্যাংগুয়েজ, একরোখা মেজাজ আর তীব্র আক্রমণাত্মক বাচনভঙ্গী আর হিলারী ক্লিনটনের মাতৃত্বসুলভ আচরণ, শান্তশিষ্ট পান্ডিত্যপূর্ণ বাকপটুতা, অস্বীকারের উপায় নেই, কি বক্তৃতায় কি বিতর্কে অনেকটা টপকে গিয়াছিলেন তিনি ট্রাম্পের কাছ থেকে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তিনি জয়ী হতে পারেননি। ট্রাম্প-ই জয়ী হয়ে হোয়াইট হাউসের সিংহাসনে বসে একটানা যুক্তরাষ্ট্রকে নিজের মতো করে বিশ্বজনীন আধিপত্যে প্রতিষ্ঠা করে গেছেন তাঁর পূর্বসূরী অনেকের মত। কে কি ভাবলো তা তাঁর কাছে খুব বড় হয়ে দেখা দেয়নি কখনো।

বলতে দ্বিধা নেই, একবিংশ শতাব্দীর বিশ্ব উল্টোপথে হাঁটছে বা হাঁটতে বাধ্য হচ্ছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের টুইন টাওয়ার ধ্বংসের পর ধর্মীয় উগ্রবাদ ও সন্ত্রাসবাদের ক্রিয়া, প্রতিক্রিয়া সর্বত্রই ছোবল মারছে। সমাজবাদ, ধর্মনিরপেক্ষতাবাদ, সাম্যবাদ অনেকটা অসহায় হয়ে পড়েছে। খোদ আমেরিকায় বর্ণবাদ আবারো মাথা তুলে দাঁড়িয়েছে। শ্বেতাঙ্গ শ্রেষ্ঠত্ববাদ আমেরিকার প্রভুত্ব গ্রাস করতে চাইছে। অভিবাসনবিরোধী শ্লোগান আজ তুঙ্গে। ট্রাম্প নির্বাচনে এঁদেরই প্রতিনিধিত্ব করছেন। গণতন্ত্রকামী বিশ্ব, চাক বা না চাক, ট্রাম্প যদি আবারো মার্কিনীদের প্রেসিডেন্ট হয়ে ফিরে আসেন তবে আশ্চর্য হবার কিছু নেই। রাষ্ট্র ও রাজনীতিতে ধর্ম, বর্ণ ও সাম্প্রদায়িকতার ব্যবহার আজ আর কারো একক থাকছে না। গোটা বিশ্ব এ পথে হাঁটছে। এর পরিণতি যে কত ভয়াবহ তা কেবল ভবিতব্য-ই জানে।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এবারকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচন, যে আসুক বা যেভাবে আসুক, নির্বাচন-পরবর্তী রাজনৈতিক পরিস্থিতি অন্ততঃ বেশ কয়েক মাসের জন্যে হলেও জটিল থেকে জটিলতর হয়ে উঠবে। তা আঁচ করতে পেরে সেখানকার আইন-শৃংখলাবাহিনী পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের জন্যে সর্বোচ্চ সতর্কতা ইতোমধ্যে গ্রহণ করেছে। অস্ত্র কেনাবেচার ধুম পড়েছে আমেরিকায়। এটি নিশ্চিত ইঙ্গিত দেয়, পরিস্থিতি ভালো নয়। নির্বাচন-পরবর্তী বেশ কিছুকাল রাজনৈতিক পরিস্থিতি ক্রমশঃ জটিল থেকে জটিলতর রূপ নেবে বলে মনে হয়।