থাইল্যান্ড রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসেন সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছে : প্রধানমন্ত্রী

3

ডেস্ক রিপোর্ট।। রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসেন থাইল্যান্ড সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বৃহস্পতিবার (২ মে) সকালে গণভবনে থাইল্যান্ড সফর নিয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।

রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন ও মিয়ানমার প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, মিয়ানমার থেকে শরণার্থী হিসেবে আমাদের এখানে আশ্রয় নিয়েছে, তাদের প্রত্যাবর্তনের ক্ষেত্রে আমরা আলোচনা করেছি। মিয়ানমারের ওপর থাইল্যান্ডের একটা প্রভাব আছে। সেক্ষেত্রে থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, তিনি এটা আরও গভীরভাবে দেখবেন। প্রত্যাবর্তনে যতটা সহযোগিতা দরকার সেটা তিনি করবেন। এ ব্যাপারে তিনি কথা দিয়েছেন। মিয়ানমারের এই বিষয়টি নিয়ে সবাই উদ্বিগ্ন। বর্তমান যে পরিস্থিতি চলছে সেটা নিয়ে থাইল্যান্ডও বেশ উদ্বিগ্ন। তবুও এটা চেষ্টা চলবে, এটুকু আশ্বাস দিয়েছেন।

থাইল্যান্ডের সঙ্গে আলোচনা প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, আলোচনার ক্ষেত্রে দেশের সার্বিক উন্নতি বিশেষ করে এসডিজি অর্জনের বিষয়টি (এসেছে)…। পাশাপাশি আঞ্চলিক সহযোগিতার ক্ষেত্রে আমাদের সহযোগিতা প্রয়োজন, বিশেষ করে যোগাযোগটা বেশি প্রয়োজন। সেদিক থেকে থাইল্যান্ডের সঙ্গে আমাদের আলোচনাটা অত্যন্ত আন্তরিকতার সঙ্গে হয়েছে। তাছাড়া ব্যবসা ও বিনিয়োগের ক্ষেত্রে আমি থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রীকে বাংলাদেশে বিনিয়োগ করার জন্য আহ্বান করেছি। আমরা হাইটেক পার্ক ও অর্থনৈতিক জোনে তাদের জায়গা দেবো।

থাইল্যান্ড সফরে বাংলাদেশের প্রাপ্তি কী, প্রধানমন্ত্রীর কাছে জানতে চান আজকের পত্রিকার সম্পাদক ড. গোলাম রহমান। জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি বলতে পারি- কী পেলাম, কী পেলাম না সেটা বড় কথা না। সহযোগিতা পাওয়ার এবং সার্বিক উন্নয়নের নতুন দুয়ার খুলে গেলো। সেখানে ভালো সুযোগ সৃষ্টি হলো। আমি সবসময় দক্ষিণ এশিয়া এবং দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর সহযোগিতা, যোগাযোগ এবং মতবিনিময়, অভিজ্ঞতা বিনিময়ের উপর গুরুত্ব দিয়ে থাকি। কারণ সার্বিকভাবে আর্থসামাজিক উন্নয়নের জন্য বন্ধুত্বটা গুরুত্বপূর্ণ। কাজেই এখানে বলব সরকার গঠনের পর এইবার প্রথম বিদেশ সফর করলাম থাইল্যান্ডে। বলতে গেলে ঘরের কাছে পড়শী দেশ। আমি সবসময় বন্ধুত্বকে গুরুত্ব দেই। থাইল্যান্ড কিন্তু খাদ্য, ফসল, ফল উৎপাদনে অনেক গবেষণা ও উৎকর্ষ আছে। এইসব ক্ষেত্রে মতবিনিময় করছি। গবেষণা কিভাবে দুইদেশ ভাগাভাগি করতে পারি, অভিজ্ঞতা নিজেদের মধ্যে ব্যবহার করতে পারি।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের সরকারি পাসপোর্টধারীরা সহজে সেখানে যেতে পারবে। চট্টগ্রাম বন্দর থেকে সহজে পণ্য রফতানি-আমদানি সহজভাবে করতে পারবো। ব্যবসা-বাণিজ্য, থাইল্যান্ড যেহেতু পর্যটনক্ষেত্রে অগ্রগামী সেই অভিজ্ঞতাটাও আমরা নিতে পারি। সেখানে বিনিয়োগ করতে পারবে, আমরা জায়গাও দিতে পারবো। পাশাপাশি আমাদের যে ৮০ মাইল লম্বা বালুকাময় কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত রয়েছে, সেখানেও বিনিয়োগ করতে আহ্বান জানিয়েছি। সেখানে জায়গা চাইলে আমরা দেবো। এই সফরের মধ্য দিয়ে দুই দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য এবং অভিজ্ঞতা বিনিময়ের ভালো সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। যা ভবিষ্যতে আর্থসামাজিক উন্নয়নে কাজে লাগবে। থাইল্যান্ড আসিয়ানভুক্ত দেশ এবং এখন বিমসটেকের সভাপতি। বিমসটেকটা আমরাই প্রথম প্রতিষ্ঠা করেছি। আমি প্রতিষ্ঠাতা সদস্য হিসাবে আছি। আঞ্চলিক সহযোগিতার ওপর আমরা গুরুত্ব দিয়ে থাকি।

তিনি বলেন, করোনা পরবর্তী ও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে বৈশ্বিক পরিস্থিতিতে প্রতিবেশী দেশগুলোর সম্পর্ক আরও সুদৃঢ় হওয়া দরকার এবং আর্থসামাজিক উন্নয়নের ক্ষেত্রে মতবিনিময় করে, অভিজ্ঞতা বিনিময় করে দেশের মানুষের কল্যাণ করতে পারি সেটাকে আমি গুরুত্ব দিয়েছি। এটাই বড় প্রাপ্তি বলে মনে করি।