সংবাদদাতা।। ঝিনাইদহে শ্মশানের গাছ কাটাকে কেন্দ্র করে ৮ জনকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে আহত করেছে দুর্বৃত্তরা। গত বুধবার (২৯ নভেম্বর) রাতে সদর উপজেলার শ্রীপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। খবর নিউজ ২৪।
তাৎক্ষণিক জড়িত সন্দেহে একজনকে আটকও করা হয়েছে। পুলিশ সুপার আজিম–উল–আহসান বলেছেন, এটার সাথে সুনির্দিষ্ট ভাবে যারা জড়িত তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
ইউপি চেয়ারম্যান আলতাফ হোসেনের অভিযোগ, মিছিলে যায়নি বলেই তাদেরকে গাছ কাটার অজুহাতে সাবেক চেয়ারম্যান জুয়েলের নেতৃত্বে হামলা চালানো হয়েছে।
তবে সাবেক চেয়ারম্যান জুয়েল বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, এখানে আমার রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ রয়েছে। আমিও এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের দাবী জানাচ্ছি।
জানা গেছে, মঙ্গলবার রাতে সদর উপজেলার শ্রীপুর গ্রামের শ্মশানের কিছু গাছ কেটে নিয়ে যায় পার্শ্ববর্তী গোপালপুর পশ্চিম পাড়ার টিটোন, জিহাদ, মিল্টন মাসুদসহ ১০–১২ জনের একটি সংঘবদ্ধ দল।
বিষয়টি শ্মশান কর্তৃপক্ষ জানতে পেরে বুধবার সকালে প্রতিবাদ জানায়। এরই জের ধরে বুধবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে শ্মশানের পাশে বসে থাকা অবস্থায় তাদের ওপর হামলা করে টিটোন, জিহাদসহ অন্যরা। এতে অন্তত ৮ জন আহত হয়।
পরিবারের লোকজন উদ্ধার করে মারাত্মক আহত অবস্থায় সন্তোষ কুমার বিশ্বাস, অমল কুমার বিশ্বাস, বিশ্বজিৎ প্রামাণিক ও চিরঞ্জীব কুমার বিশ্বাসসহ ৪জনকে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে ভর্তি করে। অবস্থার অবনতি হওয়ায় ৩ জনকে ফরিদপুর ও ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। এদের মধ্যে সন্তোেেষর অবস্থা আশংকামুক্ত নয় বলে কর্তব্যরত ডাক্তার রাজীব চক্রবর্তী নিশ্চিত করেছেন।
এদিকে হিন্দু সম্প্রদায়ের উপর হামলার খবর পেয়ে আহতদের দেখতে হাসপাতালে যান ঝিনাইদহের জেলা প্রশাসক এসএম রফিকুল ইসলাম, জেলা পুলিশ সুপার আজিম–উল–আহসান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ইমরান জাকারিয়া, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রাজিয়া আক্তার চৌধুরী, সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শাহীন উদ্দিনসহ প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
সেসময় আহতদের চিকিৎসার জন্য জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ২০ হাজার টাকা, জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে ২০ হাজার টাকা ও উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ১০ হাজার টাকা প্রদান করা হয়। এছাড়াও স্থানীয় মধুহাটি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আলতাফ হোসেন ব্যক্তিগতভাবে আহতদের ৬০ হাজার টাকা প্রদান করেন।
প্রশাসনকে খুব দ্রুতই হামলাকারীদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা গ্রহণ করার দাবী জানান ভুক্তভোগীরা।
এ ব্যাপারে ঝিনাইদহ পুলিশ সুপার আজিম–উল–আহসান বলেন, হামলার ঘটনা অত্যন্ত দুঃথজনক। অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িক সহিংসতার বিরুদ্ধে আমরা জিরো টলারেন্স নীতি অবলম্বন করছি। এ ঘটনায় ইতোমধ্যে একজনকে আটক করা হয়েছে। বাকি হামলাকারীদের শনাক্ত করে খুব দ্রুতই আমরা আইনের আওতায় আনতে পারবো।